ভারতীয় সংবিধানের ৫ এবং ৬ নং ধারায় বলা হয়েছে-
- যে শিশু ভারতীয় মাটিতে জন্মায়
সে নাগরিক বিবেচিত হবে।
- যে শিশুর পিতা/মাতা ভারতীয়
মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন।
- পাঁচ বৎসর তদূর্ধ সময় যারা স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করেছেন- যদিও এটি শর্ত সাপেক্ষ, বসবাস কাল সংবিধান চালু হবার পূর্ব হতে হবে।
এ ব্যাতিত, বর্তমান পাকিস্থান থেকে “মাইগ্রেসন” প্রক্রিয়ায় কোন ব্যক্তি ভারতে এসে যদি স্থায়ীভাবে বসবাস করেন তবে তার নাগরিকত্ব স্বীকার করা নেওয়া হবে।
পাশাপাশি ভাবে Govt. of India Act অনুযায়ী, ১৯৪৮ সালের ১৯শে জুলাই এর আগে যিনি ভারতে বসবাস করেন তিনি নাগরিকত্ব পাবার অধিকারী।
১৯৪৮ সালের পরে “মাইগ্রেসন” প্রক্রিয়ায় যদি নাগরিক হিসাবে নাম নথিভুক্ত
করেন তবে তিনি নাগরিকত্ব পাবার অধিকারী।
শর্ত হিসাবে রেজিস্ট্রেশন এর আবেদনে ৬ মাস পূর্বে তিনি ভারতে বসবাস করেছেন এটি প্রতিষ্টা করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বাড়ি ভাড়া আইন
মনে রাখতে হবে এই আইনের বিধি নিয়মাদি কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনের অপেক্ষায়, বিষয় বস্তুর পরিবর্তন হয়তো হবে না, প্রয়োজনীয় বির্তকিত বস্তুগুলির একটা সংশোধিত
মানচিত্র হয়তো সংযোজিত হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাম্প্রতিক কালে ‘বাড়িভাড়া’- সংক্রান্ত আইনটি সংশোধন এর
দ্বায়িত্ব নিয়েছেন- ১৩নং ধারায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে।
এই আইনের প্রচলনে বিভিন্ন মহলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটা বিতর্ক-র সূচনাও দেখা যাচ্ছে। কারনটা অজানা। অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে, আইনি দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে সরকারের কোনও রকম নিন্দনীয় ভূমিকা নেই।
অভিভাবক এর ভূমিকা পালনে সরকারের তরফে কোনও রকম আপত্তি ওঠেনা, কেননা, দীর্ঘদিন ধরে চালু আইনের প্রয়োগ / প্রতিক্রিয়াতে সুবিধা অসুবিধাগুলির পর্যালোচনা ও সেই অনুসারে চলতি সমস্যাগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুনভাবে “সিস্টেমটা” তৈরী করে সামাজিক কাঠামোর পরিবর্ধন ও পরিমার্জন ই অত্যন্ত দরকার।
অস্বীকার করা যায় না, স্বার্থ অনুকুল প্রতিকূল উভয়ই এর নতুন সৃষ্টি হয়ত করবে।
এই আইন, আমাদের সেই বিবেচনার ভাবনা বোধ হয় ততটা প্রয়োজনীয় নয়, কেননা প্রয়োজনে আবার সংশোধন এর রাস্তা খোলা আছে। যাই হোক এবার এক নজরে দেখা যাক।
পশ্চিমবঙ্গ প্রেমিসেস টেনান্সি এ্যাক্ট
- প্রয়োগের সীমা রেখাঃ-কলকাতা, হাওড়া মিউনিসিপ্যাল এরিয়া, সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে র মিউনিসিপ্যাল এরিয়া প্রাথমিক অবস্থায়, প্রয়োজনে সরকার সংযোজন ও বিয়োজন করতে পারে।
- আর্থিক ডাবে প্রেমিসে কাকে বলা যাবে? কলকাতা হাওড়াতে প্রেমিসেস এ ভাড়া যদি সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা মাসিক হয় তবে তাকে প্রেমিসেস এর আওতায় আনা যাবে।
এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে, অর্থাৎ অন্য পৌর এলাকাতে সর্ব্বোচ্চ ১০০০/- টাকা ভাড়া হওয়া চাই।
- এটি বাসযোগ্য প্রয়োজনে প্রযোজ্য হবে।
বানিজ্যিক ক্ষেত্রে ঐ মাত্রাটি সর্ব্বোচ্চ ৩০০০/- কলকাতা ও হাওড়া পৌরসভাতে। ঠিক একই ভাবে এটি অন্যান্য পৌরসভা অঞ্চলে সর্ব্বোচ্চ – ১৫০০/- টাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
- প্রস্তাবিত আইনে ডাড়াটের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা কি? কোন অবস্থাতেই বাড়িওয়ালা ভাড়া ব্যতীত “অন্যরূপ” কোনমূল্য যা টাকা, অথবা টাকার বিবেচনা স্বরূপ, দাবী করতে পারবে না, গ্রহনও করতে পারবে না।
কেবল কন্ট্রোলার -এর অনুমতি সহযোগে বাড়িওয়ালা এক মাসের ভাড়া অগ্রিম নিতে পারবে।
‘সব অবস্থাতেই আসবাবপত্র বিক্রয় অন্যতম শর্ত হিসাবে ভাড়া দেবার ক্ষেত্রে গ্রহন করা হবে না। ভাড়া ও রক্ষনাবেক্ষণের প্রতিটি খরচ এর লিখিত প্রদান পত্র দিতে বাড়িওয়ালা
বা তার অনুমোদিত লোক দিতে বাধ্য থাকবে। সব অবস্থাতেই বাড়ীওয়ালা প্রতিটি অত্যাবশ্যক প্রয়োজনীয় যেমন, জল, বিদ্যুৎ, আলো
যা অলিন্দে প্রয়োজন, সিড়ি, অন্যান্য সানিটেশন্ন গুলির রক্ষনাবেক্ষণ এর দায়িত্ব থাকবে।
সব অবস্থাতেই বাড়িওয়ালার বাড়িটি ভাল ব্যবহাৰ্য্য অবস্থাতে রাখবে।
বাড়িওয়ালার উদাসীনতা-র কারণে, ভাড়াটে যদি উক্ত প্রেমিসেস এর রক্ষনাবেক্ষণের প্রয়োজনে ঐ বাড়ি/ প্রেমিসে সারাই করে, তবে তার খরচ এর যাবতীয় সে উক্ত বাড়িওয়ালার নিকট দাবী করতে পারবে।
কোন কারণে, বাড়িওয়ালা যদি কোন অত্যাবশ্যক সাহায্যকারী বিষয়াদির সহযোগীতা না করে বা বন্ধ করে (যা বাড়ীর ঐ মালিকের দ্বায়িত্ব) তবে এক্ষেত্রে কন্ট্রোলার এর নিকট আবেদনের সাহায্যে অনুর্ধ ৫০০০/- টাকা পর্যন্ত ক্ষতি পূরণ পাওয়া যাবে।
মনে রাখতে হবে, ঐ ব্যাপারে সহযোগীতা বন্ধ আবশ্যক হয়ে থাকলে বিষয়টি কন্ট্রোলার এর নিকট অনুমতি সাপেক্ষ।
প্রেমিসে এ বৈদ্যুতিক – করণ এর স্বার্থ সবসময়ই ভাড়াটের অনুকূলে থাকবে,- বাড়ির মালিকের অনুমোদন এর প্রয়োজন নেই।
বাসযোগ্য প্রেমিসে এর ক্ষেত্রে ভাড়াটের মৃত্যু হলে, তার বিধবা স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পিতা, মাতা, পূবর্তন কোন বিধবা পূত্রবধূ যারা ঐ ভাড়াটের সঙ্গে এক সাথে থাকত.. একভাবে অনুর্ধ ৫ বছর ঐ বাড়িতে থাকতে পারবে, যে ঐ অবস্থাতে তাদের বসবাসের বিকল্প গঠন হয় নাই।
একইভাবে বানিজ্যিক প্রেমিসে এ ঐ আইন প্রয়োজ্য। মনে রাখবেন বানিজ্যিক
প্রেমিসে ঐ পূবর্তন বিধবা, পূত্রবধূ ব্যতীত, অন্যান্য (পিতামাতা, বিধবা স্ত্রী, পুত্র, কন্যা) একইভাবে ভাড়াটের অধিকার অনুর্ধ ৫ বৎসর বলবৎ রাখতে পারবে।
যদিও কোন সংশ্লিষ্ট যোগ্য আদালত কর্তৃক কোন ডিক্রি’ যা উচ্ছেদের কারণে প্রযোজ্যে
হয় তবে ঐ আইনের প্রয়োগ হবে না।
ভাড়া দিতে অস্বীকার করলে ভাড়াটে ঐ ভাড়া অনুর্ধ ১৫ দিনের মধ্যে বাড়িওয়ালাকে দিতে পারেন।
ভাড়াটে ঐ ভাড়া অংশ আবার উপ-ভাড়া অবস্থায় দিতে পারেন যদি বাড়ির মালিকের ঐ ক্ষেত্রে অনুমতি থাকে।
- প্রস্তাবিত আইনে বাড়ির মালিকের স্বার্থ সুরক্ষার ক্ষেত্রে কি বিধি ব্যবস্থা রাখা
হয়েছে? নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভাড়া প্রাপ্তি।
কেবল মাত্র উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভাড়া নেবার কারণেই প্রেমিসে ব্যবহার করা যাবে।
কোনও রকম পূর্ব অনুমতি ব্যাতিরকে ভাড়া করা অংশের কোনরুপ পরিবর্তন / পরিবর্ধন করা যাবে না।
পূর্ব অনুমতি ব্যাতিরকে কোনও রকম অধিকার/ আংশিক অধিকার ঐ ভাড়াটে বাড়ির মালিকের বিনা অনুমতিতে করতে পারবে না।
প্রয়োজনে বাড়ির মালিক “নোটিশ” জারির মাধ্যমে ঐ ভাড়ার অংশ ইনস্পেকশন করতে পারেন।
‘ভাড়াটে’ তার ফেয়ার রেন্ট এর ১০ শতাংশ রক্ষনাবেক্ষণ এর জন্য বাড়ির মালিককে
দিতে বাধ্য থাকবে।
- কি কি কারনে ডাড়াটে উচ্ছেদ করা চলে?
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ১০ নং ধারা-র বিরুদ্ধতা-করন।
ভাড়াটে যদি অনৈতিক, অবৈধ কারনে প্রেমিসে ব্যবহার করে।
ইচ্ছাকৃত উদাসীনতার ফলে যদি প্রেমিসেস ক্ষতি গ্রস্থ হয়।
অনুমোদন ব্যাতিরকে উপ-ভাড়াটে-র অবস্থান যোগ্যতা।
অনুমোদন ব্যাতিরকে কোনরকম নির্মান কার্য।
কোন বাড়ি বা ‘ফ্লাট এর ব্যবস্থা যদি ভাড়াটের অনুকূলে করা হয়।
যদি ভাড়া নেবার পর অধিকাংশ সময় বাড়িটা ফাঁকা অবস্থায় থাকে- অর্থাৎ ভাড়াটে যদি ভাড়া নেবার পর বাড়িটি ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে।
কোন রকম ‘নুইসেন্স’, বা বিরক্তিজনক ব্যবহার যদি ঐ ভাড়াটে বাড়ির মালিক / প্রতিবেশীদের করে থাকে।
যদি বাড়ির মালিক, অথবা অপর কেহ, যার প্রয়োজনে প্রেমিসে আয়োজিত মালিক অথবা ঐ ব্যক্তির ঐ পৌরসভা বা ১০ কিমিঃ এর মধ্যে বিকল্প বাসযোগ্য ব্যবস্থাদি না থাকে সেক্ষেত্রে।
যদি ভাড়াটে তিন মাস ভাড়া না দেয়, অথবা তিনটি ভাড়ার জন্য প্রস্তাবিত সময়- ৩ বছরের মধ্যে যেখানে নিয়মিত মাসিক ভাড়া দেওয়া হয়নি।
ভাড়াটে বাড়ির মালিকের নিকট কোনও রকম হস্তান্তর এর ভাড়ার জন্য আবেদন করতে পারবে না।
বাড়ির মালিক যদি সরকারী চাকুরী জীবি বা অসবর প্রাপ্ত সরকারী চাকরীজীবি হয় বা মিলিটারীর চাকুরীজীবি বা সদস্য হন তবে তিনি তৎক্ষনাত বাড়ি খালি করতে আদেশ দিতে পারেন।
- কখন ভাড়াটে ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন? যদি এরূপ ঘটনা ঘটে যখন যে উদ্দেশ্যে বাড়ির মালিক ঐ ভাড়াটে উচ্ছেদের জন্য মামলা করার ডিক্রি প্রাপ্ত হলেন কিন্তু ঘটনা চক্রে দেখা গেল,
বাড়ির মালিক ও ঐ বাড়ি ব্যবহার করছেন না।
অন্য ব্যক্তি বর্গ যারা সংশ্লিষ্ট, তারাও ব্যবহার করছে না, ঐ ভাড়া দেওয়া অংশ পুনরায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে ৫ বৎসরের মধ্যে অন্য কোন ভাড়াটিয়াকে।
সে ক্ষেত্রে কন্ট্রোলার এর কাছে আবেদন যা ঐ ভাড়াটে বাড়ি খালি করার ১ মাসের মধ্যে অথবা যেখানে বাড়িপুনরায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের মধ্যে সে ক্ষেত্রে ১২ মাস, ঐ ভাড়া দেবার মধ্যে। কন্ট্রোলার সেক্ষেত্রে উপযুক্ত শুনানীর পর ঐ ‘ক্ষতিপূরনের আদেশ দিতে পারেন।
মনে রাখতে হবে, উচ্ছেদ হয়ে যাবার ঐ আবেদন করলে আবেদনকারীকে তার বক্তব্য স্বপক্ষে যথেষ্ট যুক্তি প্রদান করতে হবে।
- “ফেয়ার রেন্ট’ কি ভাবে নির্ধারিত হয়?
কন্ট্রোলার এই ফেয়ার রেন্ট নির্ধারণ করেন।
কন্ট্রোলার এর কাছে আবেদন করতে পারেন।
“ফেয়াররেন্ট’ নির্ধারনে যে ক্ষেত্রে বাড়ীটি ১৯৮৪ সালের পর তৈরী হয়েছে তার ১০ শতাংশ নির্মান খরচের এবং জমির তৎকালিন মূল্য আপাত দৃষ্টিতে।
যে ক্ষেত্রে ভাড়াটে ২০ বৎসর তদূর্ধ সময় ভাড়াটিয়া বিবেচনাতে বসবাস করছে এবং বাড়ী তৈরী-র সময় ১৯৮৪ সনের পূর্বে, সেক্ষেত্রে ১. ৭.১৯৭৬ সনের প্রাপ্ত ভাড়ার অনুধ তিন গুন বিবেচিত হবে।
মনে রাখতে হবে এই ক্ষেত্রে বিশদ আইনি বিবেচনা আছে।
আপাত দৃষ্টিতে এটি আমাদের ধারনা পরিষ্কার করতে সাহায্যকারী হবে। • “ফেয়ার’ রেন্ট ‘রিডিশন’ কি ভাবে, কবে হবে? তিন বছর অন্তর ফেয়ার রেন্ট ৫ শতাংশ বর্ধিত হবে।
- ফেয়ার রেন্ট বাড়াতে কি নোটিশ প্রদান করতে হবে? হ্যাঁ। নোটিশ প্রদান এর অনুর্ধ ৩০ দিনের পর থেকে বর্ধিত অংশ বাকি বিবেচিত হবে এবং পুনরুদ্ধার যোগ্য।এর
- রক্ষনাবেক্ষণ এর দায়ীত্ব কার? এটি বাড়ির মালিকের দায়িত্ব।
যদি বাড়ির মালিক ইচ্ছাকৃতভাবে উদাসীন থাকে, সে ক্ষেত্রে ভাড়াটের আবেদন এর ভিত্তিতে “কন্ট্রোলার” ঐ বাড়ির মালিককে একটি নোটিশ দিয়ে রক্ষনাবেক্ষণ সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন।
- আপিল কোথায় করা যাবে? কন্ট্রোলার এর আদেশে স্বার্থহানীকর ব্যক্তিবর্গ
আপীল সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনাল এ করতে পারেন।
ট্রাইবুনাল এর অনুপস্থিতিতে আপিল উচ্চ আদালতে করা চলবে।
মনে রাখতে হবে, আপীল করবার জন্য সময়সীমা অনুর্ধ ত্রিশদিন থাকে- ঐ আদেশের পর থেকে।