‘ওয়াকফ’ শব্দটি মুসলিম আইন এর অন্তর্গত বিষয়াদি।
আইনগত ভাবে মুসলিম আইন ধর্মিয় অনুশাষণ অনুযায়ী যা ব্যাখ্যা আছে তাকে মূল্য
দিয়ে এই মতটাকে স্বীকৃতি দিয়েছে যা হল
সর্বশক্তিমান ভগবান/ আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসগীকৃত বস্তু/ জিনিষ যা মানব সেবার
উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে।
কোন সম্পত্তি (উৎসর্গীকৃত) দ্রব্য/দ্রবাদি যা কিনা।
মজ্জিদ তৈয়ারী তে ব্যবহৃত হতে পারে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করনের স্বার্থে ব্যবহৃত হতে পারে। মক্কা দর্শনের তীর্থযাত্রীদের যারা আর্থিকভাবে সবল নয়। তাদের সাহায্য করন। কোরান এর বিষয়াদি প্রচলন। কুয়ো জলাশয় এর বন্দোবস্ত। মুসলিম ধর্মগুরুদের জন্মদিনে খাদ্য বিতরন। মৃত ব্যাক্তিদের শবাধার ও শবআচ্ছাদন এর ব্যবস্থা। উরুস (বাৎসরিক) এর সম্পাদন। ইমাম বাড়ার সংস্কার। মসজিদে যথাযথ আলোর ব্যবস্থা।
অর্থাৎ এক কথায় কোন সম্পত্তি যদি আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করা হয় তবে তা হতে প্রাপ্ত আয় সামাজিক কার্যকলাপ ও জনস্বার্থে ব্যায় করা হবে।
এতদ্বাতিত অন্য কোনও প্রয়োজন ঐ ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যয় বা ব্যয় সিদ্ধতা আইনি
স্বীকৃতি পাবে না।
“রেজিষ্ট্রেশন / নিবন্ধন করণ” আইন
- নিবন্ধন বা “রেজিট্রেশন” কি? আইনি জটিলতার সাহায্য ছাড়া খুব সহজভাবে বলতে গেলে নিবন্ধন / রেজিট্রেশন এর অর্থ।
যাবতীয় কার্যপরিচালনা / সম্পাদন সংশ্লিষ্ট সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী গোচরে আনয়ন।
বিষয়টাকে আরও সহজ করা যাক।
‘ক’ বাবু-র জমি কল্যানীতে আছে।
‘খ’ বাবু থাকেন ঘোলাতে।
‘ক’ বাবুর জমি ‘খ’ বাবু কিনবেন এই মর্মে সিদ্ধান্ত হল। যথা সময়ে জমির প্রস্তাবিত মূল্যে ‘খ’ বাবু ‘ক’ বাবুর জমির মালিক হলেন- এটি লিখিত হল।
- এই বিষয় সরকার কে জানাবেন কি ডাবে? ‘রেজিট্রেশন’ / নিবন্ধন করণ সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক এর কার্য্যলয়ে নিধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করলে, তবে সরকার এটি অনুমোদন করবেন এই মর্মে যে ‘ক’ বাবুর কল্যানীর জমির মালিক ঘোলার ‘খ’ বাবু।
দলিল রেজিস্ট্রি:
সম্পাদনের চারমাসের মধ্যে।
অন্যথায় ‘রেজিট্রেশন ফি’ এর অধিক (আনুমানিক ১০গুন) এর সাহায্যে নিবন্ধন
করন সম্ভব।
দলিল সম্পাদনের পর আপত্তি: গ্রাহ্য হয়।
সময়:
চারমাস অনুর্ধ।
যোগ্যতা: যে ব্যক্তির নামে সম্পাদিত হয়েছে।
অবৈধ বা মিথ্যা দলিল সম্পাদনের পর যদিও রেজিট্রেশন হয় পরে প্রমানিত হলে তা অবৈধ রেজিট্রেশন বিবেচনায় বাতিল হবার যোগ্য বিবেচিত হবে।
মনে রাখতে হবে দলিল সম্পাদনের নিমিত্ত যাবতীয় ঘটনার সত্যতা প্রমান এর দায়িত্ব নির্বাহকের, অজ্ঞাত কারণে সত্যতা প্রকাশে অক্ষমতা সংশোধনের দাবী রাখে।
নিচের প্রত্যেকটি নিবন্ধন বাধ্যতামূলক
বিক্রয় কোবালা (Sale Deed)
চুক্তি / বিনিময় / অন্যান্য যার আর্থিক মূল্যায়ন ১০০ টাকা তদূর্ধ।
দানপত্র।
অংশীদারী চুক্তি (ঐচ্ছিক)।
বন্ধকপত্র।
বিবাহ, বর্তমানে বাধ্যতামূলক।
ইচ্ছাপত্র (বাধ্যতামূলক নয়) (Will)
পর্দানসীন/ বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত অথবা চলাফেরায় অক্ষম/ বৃদ্ধ অসুস্থ ব্যক্তিবর্গের ক্ষেত্রে দলিল সম্পাদন “কমিশন” এর মাধ্যমে করা সম্ভব। বলা বাহুল্য যাবতীয় ব্যায়ভার বহন এর দায়িত্ব যিনি রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছেন তাকে বহন করতে হবে।
সাব-রেজিস্ট্রার সাধারনত দলিল রেজিস্ট্রি করেন। জেলা রেজিস্ট্রার একইভাবে ঐ কাজে উপযুক্ত। অজানা কারনে “রেজিষ্ট্রি” করার আবেদন বাতিল হলে আদালত কর্তৃক
পদ্ধতিগত সহযোগীতায় যাবতীয় ঘটনার বিবৃতিতে রেজিট্রেশন এর পুনরায় সুযোগ গ্রহন সম্ভব।
বিবাহ নিবন্ধন এর বিষয়ে কিছু তথ্য
রাজ্য সরকার নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছেন।
দুভাবে এই নিবন্ধন করণ সম্ভব।
(১) উভয়পক্ষের সহমতে সংশিষ্ট “বিবাহ নিবন্ধক” একটি আগামবার্তা (Notice) গ্রহন করবেন। নোটিশ জারিকরনের অতিবাহিত ৩০ দিনের পর উভয়পক্ষের সাক্ষ্য সহযোগে চূড়ান্তভাবে বিবাহ নিবন্ধন করবেন।
(২) বিবাহ কালে “রেজিষ্ট্রি”।
রেজিষ্ট্রার সংশ্লিষ্ট প্রথানুযায়ী পর্যবেক্ষণ করবেন
(১) অগ্নিসাক্ষে সপ্তমপদ অতিক্রমন (সপ্তপদী)
(২) যাবতীয় আচার বিচার পর্যালোচনা চূড়ান্তভাবে।
২নং কেবল হিন্দু ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী প্রযোজ্য।
আইনভঙ্গ কারী অনুর্ধ ২৫/টাকা জরিমানা গ্রাহা।
বিবাহ সংশ্লিষ্ট রেজিষ্ট্রি খাতা ভুক্ত হবে।
রেজিট্রেশন শংসাপত্র যথা সময়ে রেজিষ্ট্রার কর্তৃক বিবাহিত দম্পতিতে হস্তান্তরিত হবে।
ভারতীয় চুক্তি আইন – ১০ ও ১১নং ধারা
চুক্তির মূল বিষয়টা হল কোন ব্যাপারে দুটি পক্ষ
(১) সহমত (২) বিবিধ মত (৩) পারস্পরিক মত (৪) আংশিক মত কে প্রতিষ্টা করন।
- সহমতের চুক্তি – ধরুন ‘ক’ ও ‘খ’ বাবু ঠিক করলেন আগামী দশবৎসর তারা এক বাড়ীতে ‘ক’ বাবু উপর তলা ‘খ’ বাবু নীচ তলায় থাকবেন।
- বিবিধ মত এর চুক্তি – ক বাবু ও খ বাবু জল ব্যবহার করন ভিন্ন সময় সূচীতে করবেন।
- পারস্পরিক মত এর চুক্তি – ক বাবু ও খ বাবু দুজনে মিলে একটি কুকুর পুষবেন।
- আংশিক মত এর চুক্তি ক বাবুর অতিথি আসলে ‘খ’ বাবুর অংশে থাকবেন।
এই রূপ বিবিধ বিষয়ে চুক্তি হয়।
মনে রাখতে হবে
অসম্ভব, অনৈতিক, জনস্বার্থহানীকর বে-আইনী চুক্তি হয় না, সুস্থ সম্ভব, প্রাপ্ত বয়স্ক বাক্তি চুক্তি করবার অধিকারী। ১০নং ধারায় বলা হয়েছে যে নাবালক/নাবালিকা বা মানসিক ভারসাম্য হীন কোন ব্যক্তি কোন চুক্তি করতে পারবে না। ১২নং ধারায় সুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের চুক্তিই গ্রহণযোগ্য।