দস্যুবৃত্তি- ৩৯১ নং ধারা

যদি অনধিক চারজন মিলে চুরি বা জোরকরে আদায় করতে গিয়ে কিছু ইচ্ছাকৃত ভাবে খুন / জখম / করে তবে তা ‘দন্ডবিধির’ দস্যুবৃত্তির সংজ্ঞাকে সম্পূর্ন করবে।

তবে এ ক্ষেত্রে বা যাবতীয় ফৌজদারী অপরাধ বিভিন্ন বিচারাধীন বিষয়গুলি একত্মা করে ঘটানা গুলিকে বিচার করা হয়।

ডাকাতি- ৩৯২/৩৯৩/৩৯৪/৩৯৬/৩৯৭ নং ধারা

পাঁচ তদুর্ধ ব্যক্তি বর্গের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে একইভাবে দেখা হবে যদি তারা দস্যুবৃত্তির প্রচেষ্টা করে বা সংগঠিত করে, তবে তাকে, দন্ডবিধির ‘ডাকাতি’ অপরাধের সংজ্ঞা সম্পূর্ণ

করবে।

খুন/ জখম ডাকাতির মধ্যে শাস্তি ভিন্নরুপ। স্বেচ্ছায় আঘাত ঐ শাস্তি

ভিন্নরুপ। প্রচেষ্টা ছিল তবে সংগঠিত হয় শাস্তি অভিন্ন।

বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধ ৪০৮ ও ৪০৯ ধারা

“বিশ্বাস” কে কেন্দ্র করে কোনরুপ দায়িত্বভঙ্গ করে যদি বিশ্বাসদাতা অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের কোনরুপ ক্ষতি / ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ ঘটে।

তবে তাকে বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধের দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হবে।

চাকর, কেরানি, পরিচারক/ পারিচারিকা-র দায়িত্ব এ সব ক্ষেত্রে অনেক বেশি।

কারাদন্ড বা জরিমানা উভয়ই একই সাথে গ্রাহ্য।

চুরির দ্রব্য গ্রহন – ৪১১/৪১২ নং-ধারা

জ্ঞাতসারে চুরিকরা জিনিসপত্র রাখলে তবে তা ‘অপরাধ’ বিবেচনায় বিবেচিত হয়।

“চুরি করা জিনিস নয়’ এটি প্রমান করতে হবে, দায় কিন্তু অভিযুক্তর।

জালিয়াতি

প্রবঞ্চনা বা প্রতারনার জন্য কোন তথ্য সম্পূর্ণ/ আংশিক মিথ্যাভাবে বাজারে প্রকাশ/ প্রচার করে এবং তা সার্বিক সত্য এই বিশ্বাসে জনসাধারনের ক্ষতি (বর্তমানে/ভবিষ্যতে হতে পারে) বা হয় তবে যে ব্যক্তি জালিয়াতি করেছে সে ‘দন্ডবিধির নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করবে।

স্বেচ্ছায় আঘাত

খেয়াল খুশি মত যদি কেউ কাউকে মারাত্মক আঘাত করে তবে তাকে সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী শাস্তি পাবে / পেতে হবে।

স্বেচ্ছায় আঘাতের পরিনাম

স্বেচ্ছায় আঘাতে যদি (১) পুরুষত্বহানী / (ইম্যাসকুলেশন)। (২) অঙ্গহানী- স্থায়ীভাবে। (৩) মুখাবয়ব বিকৃত। (৪) চোখ অথবা কান এর স্থায়ী ক্ষতি সাধন। (৫) দাঁত অথবা কোন অস্থি সন্ধি স্থলের হাঁড় বিকৃত করন/ অঙ্গহানী স্থায়ীভাবে। (৬) কোনরুপ আঘাত যাতে আঘাত প্রাপ্তব্যক্তি বেশ কিছু দিন আহত অবস্থায় থাকে।

এরূপক্ষেত্রে ঐ কার্যের ফলে আঘাতকারী দণ্ডবিধি-র” গ্রিভাস হার্ট’ ধারায় শাস্তি পাবে।

খুনের প্রচেষ্টা- ৩০৭নং ধারা

(Attempt to Murder)

ইচ্ছাকৃতভাবে খুনের প্রচেষ্টা বা প্ররোচনায় কোন কার্য যাতে কোনরুপ জীবনহানী ভবিষ্যতে বা বর্তমানে হতে পারে।

কোন কাজ যাতে অজ্ঞানে ঐ জীবনহানী ঘটা সম্ভব যদিও কৃত ব্যক্তি জানত না ঐ কাজে লোকটা মারা যাবে।

কোন কাজ যাতে সে রূপ সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার ছিল তা করা হয় নি। তবে তা খুনের প্রচেষ্টা বিধিতে যে দৃষ্টি কোন ‘দন্ডবিধিতে বর্নিত আছে তাই হবে।

খুন বা হত্যা ৩০২নং ধারা

(৩০০-এ- ব্যাখা আছে। ৩০২ তে শাস্তি দান)

কোনরকমভাবে কেউ কারো জীবনহানী ঘটালে তাকে খুন করা বা ইংরাজীতে বলা হয় “মার্ডার” করা হয়েছে।

“ইন্ডিয়ান পেনাল কোড” এ ব্যাপারে যা বলেছে তা নিম্নরূপ ” যেকেউ নরহত্যার /জীবনহানীর উদ্যেশ্যে কারো জীবনহানী ঘটালে তাকে মার্ডার বা খুন বলা হবে।

ধরুন কেউ ঘুমের ঔষধ খান রোজ দুটি, উদ্যেশ্য প্রনোদিত ভাবে কেউ যদি ঐ ঔষধ তিনটি দিয়ে ঐ লোকটিকে ঘুম পাড়ান এবং ঐ তিনটি, যদি দেখা যায় কৃত অভিযুক্ত ব্যক্তি জানতেন খেলে লোকটির জীবনহানী হবে তার ঐ ব্যক্তি অপরকে খুন করেছেন।

ধর্ষণ ৩৭৫নং ধারা

নারীপুরুষের দৈহিক মিলনের ক্ষেত্রে এই অপরাধ টির সংজ্ঞা জড়িত।

যদি পুরুষ —

নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে দৈহিক মিলন ঘটায়। সম্মতিতে মিলন। জার/ বলপূর্বক সম্মতি আদায়ের মাধ্যমে মিলন। বিবাহ সম্পর্কিত প্রলোভনের মাধ্যমে মিলন। পরস্ত্রীর সঙ্গে মিলন। ১৬ বছর কম বয়স্কার ক্ষেত্রে সম্মতি / অসম্মতি তে মিলন। মনে রাখবেন ধর্ষণ প্রমানে উভয়ের শারীরিক সহবাস চিকিৎসা পরিভাষার ব্যাখা অনুযায়ী অনেকটা নির্ভর করে। গনধর্ষণে প্রত্যেকে সমানভাবে দোষী। তত্তাবধানকারী কর্তব্য রত ব্যক্তি বর্গের প্রত্যেকের দায়িত্ব থাকে নারীর অধিকার রক্ষায়, এ ক্ষেত্রে বিপরীত কিছু ঘটনা আগত হলে তার ফল সবাই সমানভাবে ভোগ করে থাকেন। এই বিষয়গুলি আলাদা আলাদা ভাবে ৩৭৬ এ/বি/সি/ডি এভাবে বর্নিত আছে।

ব্যাভিচার – ৪৯৭নং ধারা

“অপর এর স্ত্রী” এই জ্ঞানে এবং অসম্মতিতে যদি কেউ তা সত্ত্বেও তার সঙ্গে দৈহিক মিলন ঘটায় তবে কৃত ব্যক্তি ধর্ষনের বদলে ব্যাভিচারে অভিযুক্ত হবে।

নারীর ঐ বিষয়ে স্বেচ্ছা সম্মতি থাকলেও। নারীর কোনরুপ দন্ড হবে না।

বিবাহিত ঐ নারীর ঐ সহবাসের ফলে আগত সন্তান এর পরিস্থিতিতে ঐ উপপতির নিকট থেকে ভরন পোষন চাইতে পারে।

যদিও ব্যাভিচার প্রমাণ করা অত্যন্ত কঠিন। প্রধানত স্বামীর অনুপস্থিতেতেই এই যৌন অপরাধ ঘটে। সন্তান-ভরনপোষণ প্রার্থনায় প্রমান করা প্রয়োজনীয় যে স্বামী অনুপস্থিত ছিল।

নাবালিকা ক্রয় বিক্রয়

১৮ বৎসর এর নীচে কোন

নাবালিকার ক্রয় বিক্রয়,

দৈহিকমিলনের উদ্দেশ্যে

নাবালিকা ভাড়া

নাবালিকা আনয়ন/হস্তান্তর

শাস্তি যোগ্য অপরাধ, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী।

গর্ভপাত

নারীর অসম্মতিতে গর্ভপাত ঘটালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ঐ একই কাজে চিকিৎসায় গাফিলতি / ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত গর্ভপাতের ফলে যদি নারীর মৃত্যু হয় তবে তা আরও শাস্তি যোগ্য, যা অনুর্ধ ১০ বৎসর কারাদন্ড হতে পারে।

গর্ভপাতে সংশ্লিষ্ট নারীর সম্মতি ছিল কিনা এটি অন্যতম প্রধান বিচার্য বিষয় / সেই অনুযায়ী বিবেচনা নিয়ন্ত্রিত।

ঘুষ নেওয়া / দেওয়া

পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারী/ বে-সরকারী / আধা সরকারী কর্মী বৈধ/

তার প্রাপ্য অর্থ ব্যতীত কোনরুপ অর্থ/ পুরস্কার / অন্যান্য সুবিধা যা তার কোন অবস্থায়। প্রাপ্য নয় এই রূপ অর্থ/ অন্যান্য গ্রহন আইনি দৃষ্টিতে অপরাধ / কোনরূপ প্রতিশ্রুতি প্রদান ও এইরুপ অপরাধ বিবেচিত হবে।

কারাদন্ড / অর্থদন্ড উভয় সম্ভব।

মুদ্রা জালকরণ

কোনরূপ অবস্থায় কোন মাধ্যমের সাহায্যে প্রচলিত মুদ্রার মুদ্রা যা ভারত সরকার এর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অনুমোদিত নয় সে ক্ষেত্রে কৃত ব্যক্তি দন্ডযোগ্য।

মনে রাখা প্রয়োজন, সংশ্লিষ্ট কোন রুপ মাধ্যম বা প্র-কৌশলগত কোনরূপ মাধ্যম উৎপাদন/বিক্রয়/ক্রয়/ হস্তান্তর যা মুদ্রা জালকরনের ক্ষেত্রে অন্যতম হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। সে রূপ কোন কার্য সম্পাদন / সম্পাদনায় অংশগ্রহন / সহয়তা সবই দন্ডযোগ্য অপরাধ।

ভারতীয় মুদ্রার জালকারণ ১০ বছর কারাদণ্ড অন্যান্য ক্ষেত্রে ৭ বছর কারাদণ্ড।

সরকারী টিকিট / নথী জালকরণ

সরকারী টিকিট অথবা নথী যা সরকারী খাজনা আদায়ে প্রধান মাধ্যম, কোনরুপ প্রচেষ্টায় ঐ একই করণে যা সরকারী অনুমোদন ব্যাতিরকে ঘটে এবং মাধ্যম বলা বাহুল্য জাল বা মিথ্যা,

কোনরূপ জালকরণ/প্রচেষ্টা ঐ উদ্দেশ্যে তবে তা দন্ডযোগ্য অপরাধ।

এক্ষেত্রে সরকারি স্ট্যাম্প যার শাস্তি ১০ বছর অনুর্ধ হতে পারে। ঐ ধরণের কার্যে বাস্তব রূপ দানের প্রকৌশলগত যন্ত্রপাতির রক্ষণ ও ৭ বছর কারাদণ্ডকে স্বীকৃতি দেয়।

মিথ্যা পরিমাপক ব্যবহার

প্রতারনার উদ্দেশ্যে মিথ্যা পরিমাপক এর ব্যবহার অর্থাৎ বলা চলে ওজন, যন্ত্র, বাটখারা, ধারক এর অপপ্রয়োগ মাপক ফিতার ভুল বা জাল ব্যবহার দন্ডযোগ্য অপরাধ। সেক্ষেত্রে অনধিক ১ বছর কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ড হতে পারে।

দলিল জাল

উদ্দেশ্যে প্রনোদিতভাবে, কেবল মাত্র প্রতারনার উদ্দেশ্যে কোনরূপ জাল দলিল এর প্রস্তুত করণ অথবা আংশিক প্রস্তুত করণ যা সাধারণ স্বার্থ হানিকর/ ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থহানিকর – বর্তমানে অথবা ভবিষ্যতে তবে তা দলিল জালকরনের অপরাধে দন্ডযোগ্য বিবেচিত হবে।

উভয় ক্ষেত্রে দোষি ব্যাক্তি ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তি যোগ্য।

খাদ্য ভেজাল

“ফুড অ্যাডালটিরেশন এ্যাকট” এর বিধান এর সঙ্গে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে খাদ্য পানীয়তে ভেজাল যা সার্বিক হানীকর তবে কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড যা ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী প্রযোজ্য তাতে দণ্ডিত কারাদন্ড অনুর্ধ ৬ মাস ও অর্থদন্ড হবে।

মানহানী

কোনরুপ অযৌক্তিক ব্যবহার যা অপর কেহ / প্রতিষ্ঠান / সার্বিক ভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক / প্রতিষ্টান কেন্দ্রিক / সার্বিক সম্মানহনীকর যা

শব্দের ব্যবহারে সম্ভব / উচ্চারণ / লিখন প্রতিচ্ছবি/ লিখিত ব্যবহারে সম্ভব প্রকাশনার মাধ্যমে করা সম্ভব

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি ব্যতিক্রম আছে।

কোনরূপ আপাতদৃষ্টিতে অযৌক্তিক / অন্যান্য যদি ও তা কোনরূপ সার্বিক স্বার্থে ঘটনাটা সত্য হওয়া চাই ব্যবহৃত। কোনরূপ আদালতের কার্যপ্রনালী (যা প্রকৃত সত্য) ও পরিনাম কোনরূপ প্রকাশনার লেখকের কার্যপ্রনালী ও ব্যবহার ততটা যা ঐ প্রকাশনার / স্বার্থের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

অস্ত্র সহ অবৈধ সমাবেশ

কোনরূপ অস্ত্র / এরুপ কিছু যা ভারতীয় “আর্মস এ্যাক্ট” অনুযায়ী অস্ত্র বিবেচনায় স্বীকৃত বা কোনরূপ জিনিস যা-র সাহায্যে মানব শরীরে আঘাত হানা সম্ভব (মারাত্মক) বা কোনরূপ সম্পত্তির ক্ষতি করা সম্ভব তবে, সেইরূপ মারাত্মক অস্ত্র শস্ত্র সহ সমাবেশ যা সম্পূর্ণ অবৈধ, অংশগ্রহন এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিধান অনুযায়ী কারাদন্ড ও অর্থদন্ড উভয়ই হতে পারে।